ইমরান খান ভন্ড! বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা দিচ্ছেননা কেন?
"পূর্ব পাকিস্তানকে" স্বাধীন করার জন্য "ভারত" কেন সর্বোতভাবে সাহায্য করেছিল বলতে পারবেন? নিশ্চয়ই এটা ভগবান কিংবা গোমাতাকে খুশি করার জন্য নয়?
আর আপনি যদি এবার কাশ্মীর ইস্যুটা সরাসরি "পুর্ব পাকিস্তান বিচ্ছিন্নকরণ" এর সাথে খাপে খাপে মিলিয়ে নিতে চান, তাইলে আমার আপত্তি নেই, যদিও এখানে 'ইসলামী বা মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ' এর বিষয়টাও যে জড়িত, তা সুপ্রমাণিত।
কাশ্মীরের স্বাধীনতা যোদ্ধাদেরকে 'মুজাহিদিন' বলা হয় এটা নিশ্চয়ই জানেন?
প্রাসংগিকভাবে, মুসলিম আরাকান, পাত্তানী, কুর্দিস্তান, ঝিংঝিয়াং .... এই দেশগুলি স্বাধীন কেন হতে পারছে না জানেন?
কারণ এগুলোকে স্বাধীন করার জন্য পার্শ্ববর্তী বৃহৎ রাষ্ট্রগুলির বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়া কিংবা কাশ্মীরের জিহাদে সহযোগিতা করার মতো বড় ধরনের কোন গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক, ধর্মীয় কিংবা অর্থনৈতিক স্বার্থ বা লাভ নেই সেজন্য। কিছু ক্ষেত্রে ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতাও অবশ্য দায়ী।
আর বেলুচিস্তানের তথাকথিত স্বাধিকার আন্দোলনের পেছনে রয়েছে ট্রিপল কন্সপারেসি (Triple Conspiracy) থিওরি যা আমি নিচে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি।
১/৩: পুর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করার ক্ষেত্রে ভারতের যে প্রক্রিয়া বা স্বার্থ ছিল বেলুচিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করতে হুবুহু ১০০% অবিকল প্রক্রিয়া বা প্রচেষ্টার মধ্যে নিবেদিত রয়েছে ভারতের মিডিয়া থেকে শুরু করে পুরো স্টেট মেকানিজম! কাজেই, এটা সমর্থন না করার ক্ষেত্রে যেকোন বিবেকবান মানুষের পক্ষে যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
২/৩: এখানে ইরানের 'সীমিত পরিসরে সমর্থন' বা স্বার্থটাও কিছুটা সমান্তরাল যা রীতিমতো ওপেন সিক্রেট! কিন্তু এটা আবার এত প্রবল বা ব্যাপক স্বার্থ নয় যে, পাকিস্তানের মতো দেশের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে বা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেে কিংবা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা টাইপের কিছুর মাধ্যমে ইরান বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে।
৩/৩: পাকিস্তান একটি বহুজাতিক রাষ্ট্র যেখানে পাঞ্জাব, পাঠান, বালুচ, পাখতুন ইত্যাদি নানাবিধ জাতি উপজাতিসহ হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধসহ বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী লোকজন বসবাস করে। পাশাপাশি, মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় মতবাদ বা মাজহাবের ভিন্নতাও রয়েছে ব্যাপক। যেমনঃ শিয়া, সুন্নী, আহলে হাদিস, সালাফী, মাজহাবী, লা-মাজহাবী ইত্যাদি।
কাজেই, চাইলেই সবগুলো জাতিকে আলাদা আলাদা ভাবে একেকটা স্বাধীন রাষ্ট্র তৈরী করে দেওয়া সম্ভব নয়। তাছাড়া এটা যুক্তিবিবর্জিত, প্রয়োজনও নেই।
প্রয়োজন যে একেবারেই নেই এবং ভাবনাটা কতটা আত্মঘাতী তার প্রমাণ স্বাধীনতা লাভ করার পরে বর্তমান বাংলাদেশের জনগণ এখন কড়ায় গন্ডায় বুঝতেছে ...... বিএসএফ আর নাসাকার কাছে প্রতিনিয়ত লাত্থি-উষ্টা, গুলি, পাথর... খেয়ে মরছে সীমান্তের লোকজন। আবার দিন দুপুরে আমাদের মা-বোনেরা ধর্ষিতা হচ্ছেন স্কুলে, বাসে, ট্রেনে, পুলিশ হেফাজতে কিংবা হাসপাতালে! জাতির সেরা সৎ ও মেধাবী সন্তানরা নির্বিচারে দিনে রাতে গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত সিলেক্টেড কিলিং এর শিকার হচ্ছে! তথাকথিত স্বাধীনতার মূল সহযোদ্ধা ভারত পিলখানা বিদ্রোহের অন্তরালে স্বাধীন বাংলাদেশকে রীতিমতো বাংলাদে সেনাবাহিনীকে অফিসার শূন্য করে দিয়েছে ২০০৮ সালে, যা রীতিমতো ওপেন সিক্রেট। দেশের ব্যাংকগুলি লুট হচ্ছে, রিজার্ভ গায়েব হচ্ছে, চাকরির বাজার দখল হচ্ছে, আদালতগুলি সার্কাসে পরিণত হয়েছে! সবই সংঘঠিত হচ্ছে ভারতের দাদাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদেই।
অথচ এগুলোর প্রতিবাদ করার মতো ন্যূনতম সাহস কিংবা সুযোগও সরকারের নেই সেটা স্বাধীনতার একটা করুণ বাস্তবতা!
কারণ ভারত সত্যিকার অর্থে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করতে চায়নি, বরং কেবল নিজের স্বার্থেই স্বাধীনতার মোড়কে "বাংলাদেশ শিরোনামে" নতুন একটা করদরাজ্য তৈরি করতে চেয়েছিল। সেক্ষেত্রে তারা যে পুরোপুরিই সফল; তথাকথিত স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরও এতদঞ্চলের অধিবাসীদের কাছে তা দিবালোকের মতোই সুস্পষ্ট!
আগেই বলেছি, হুবুহু একই প্রক্রিয়া বা প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ভারত, তথাকথিত বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার নামে।
কাজেই, এ প্রসংগে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, বেলুচিস্তানের অধিবাসীদের উপর যদি কোন ধরনের অন্যায়, অবিচার কিংবা বৈষম্য করা হয়ে থাকে সেটা অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত।
তবে, পাশাপাশি এটা মনে রাখতে হবে যে, তাদেরকেও তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের বলদদের মতো করে যারা "স্বাধীনতার ঢুলুঢুলু স্বপ্ন" দিয়ে এখন চোখে জ্বালা ধরায় দিচ্ছে, কোনভাবে স্বাধীন হলেও তথাকথিত স্বাধীনতার পর এই ইন্ডিয়ান পশুগুলিই সবার আগে তাদেরকে গোলাম বানিয়ে নেবে পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমান বাসিন্দাদের মতোই।
তারচেয়ে বরং ওরা পাকিস্তানের মতো বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী একটা মুসলিম দেশের সাথে থাকাটা বহুলাংশেই অধিকতর নিরাপদ। তাছাড়া পাকিস্তানের বিচার বিভাগ অনেক বছর ধরেই বেশ ভালো সার্ভিস দিচ্ছে! কোন ধরণের অবিচার কিংবা বৈষম্যের শিকার হলে সেগুলোর প্রতিকারের সুযোগ রয়েছে বিচার ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে (নওয়াজ শরীফের ঘটনাটা একটা উৎকৃষ্ট উদাহারণ)।
*** বেলুচিস্তানের তথাকথিত স্বাধীনতা আন্দোলন সম্পর্কে আমাদের এক ভূ-রাজনীতি বিশারদ, শ্রদ্ধাভাজন বড় ভাইয়ের মন্তব্যঃ
Mohammad Basirul Haq Sinha
খোদ বেলুচরা কি বেলুচিস্তানের "স্বাধীনতা" চেয়েছে? তারা কি ২০০ লোকের একটা পাবলিক মিটিং বেলুচিস্তানের কোথাও করতে পারে?
কাশ্মীরে ৭ লাখ ইন্ডিয়ান সোলজারের এত দমন-পীড়নের পরেও স্বাধীনতাকামীরা
----
পাশাপাশি, এ প্রসংগে তিনি নিচের লিংকটা স্টাডি করার পরামর্শ দেনঃ
পরিশেষে বলতে চাই, কাশ্মীর, জিনজিয়াং কিংবা বালুচিস্তান এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে সবার আগেই আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতি তথা Geo-political ফিল্ডে আপনার নিজের জ্ঞান বা দক্ষতার পরিমাপ নিজেই আগে যাচাই করুন। কারণ ভূ-রাজনীতি আর আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে আপনার পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকলে পাবলিক পোস্টে এসব বিষয়ে মন্তব্য করে কেবল ঘৃণা ছড়ানো ছাড়া আর কোন লাভ হয় না।
তাছাড়া কেউ ভালো কোন কাজ করলে তার অতীত নিয়ে বেশি খোঁচাখুচি না করে 'ভালো কাজের' তার প্রশংসা করার মানসিকতা থাকা জরুরী। সেই মানসিকতা বা যোগ্যতা আপনার না থাকাটা মানবিক গুনাবলী নয়, বরং পাশবিকতার পরিচয়।
-------
প্রাসঙ্গিকঃ
ইমরান খান নির্যাতিত উইঘুর মুসলিমদের পক্ষে কিছু বলেননি কেন?
https://bloggerosmancox.blogspot.com/2019/09/blog-post_29.html
https://bloggerosmancox.blogspot.com/2019/09/blog-post_29.html
করোনা-ভাইরাসের পেছনে পেছনে দৌড়ানো বনাম সামনে থেকে মোকাবেলা করা।
https://bloggerosman112.blogspot.com/2020/04/blog-post.html?spref=tw
https://bloggerosman112.blogspot.com/2020/04/blog-post.html?spref=tw
#Imran_Khan
#Pakistan
#Beluchistan
Comments
Post a Comment