Skip to main content

কুখ্যাত "সিরিয়্যাল কিলার" ওসি প্রদীপঃ "চাহিদামতো টাকা" না পেলেই দিতেন ক্রসফায়ার!

 কুখ্যাত খুনী ওসি প্রদীপঃ নরহত্যাই যার নেশা!

সবার আগেই শুনুন শুনুন, ক্রাইম স্পেশালিষ্ট সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের বিশেষ ভিডিও ফিচার (এক নজরে ওসি প্রদীপ):

ভিডিওঃ এক নজরে কুখ্যাত খুনী সন্ত্রাসী ওসি প্রদীপ       

ওসি প্রদীপের হাতে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের পরিসংখ্যানঃ

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারাদেশে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান শুরু করে সরকার। এতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায় ক্রসফায়ারের পরিসংখ্যান।

গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত শুধু কক্সবাজার জেলায় পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৮৭ জন। এর মধ্যে পুলিশের সঙ্গে ১৭৪ জন, বিজিবির সঙ্গে ৬২ জন ও র‌্যাবের সঙ্গে ৫১ জন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

আর টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন ১৬১ জন। এর মধ্যে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীর মাধ্যমে ঘটেছে ১৪৪টি ক্রসফায়ারের ঘটনা। এসব ক্রসফায়ারের একটি বড় অংশ সংঘটিত হয় মেরিন ড্রাইভ সড়কে।

ওসি প্রদীপ বন্দুকযুদ্ধের নামে ১৪৪ ক্রসফয়ারে হত্যা করেছেন ১৬১ জন মানুষ

সোশ্যাল এক্টিভিস্ট ও কক্সবাজারের সর্বজন শ্রদ্ধেয়া রাজনীতিবিদ কাবেরী আপার ধারণকৃত ভিডিওতে শুনুন ওসি প্রদীপের নিষ্ঠুরতা ও কিছু হৃদয় বিদারক গল্প!

বন্দুক যুদ্ধের নামে কক্সবাজার টেকনাফের ওসি প্রদীপ অসংখ্য সাধারণ নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করেছিল। যার দায়ভার কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের নিতেই হবে। আমরা সিনহা হত্যাকান্ড সহ সমস্ত হত্যা ও মিথ্যা মামলার বিচার চাই।নতুবা জাতির জনকের আত্মা কস্ট পাবে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্যাগ সাধনায় আজকের উন্নত বাংলাদেশ। 

অন্যায়কারীদের বিচার না হলে
বিপর্যস্ত হবে বঙ্গবন্ধু তনয়ার
কস্টার্জিত উন্নয়নশীল দেশ।

ফেইসবুকে লাইভ ভিডিওর লিংক  


বিতর্কিত ছিল আগে থেকেই: ২০১৩ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি হরতাল চলাকালে পাঁচলাইশে থানা এলাকায় শিবিরকর্মীদের গায়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন ওসি প্রদীপ। 
একই বছর ২৪শে জানুয়ারি ওসি প্রদীপের একটি মামলায় রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করায় এক আইনজীবীকে লালদীঘির পাড় থেকে ধরে নিয়ে থানায় আটকে রাতভর নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনের শিকার ওই আইনজীবী সুস্থ হয়ে ২৯শে জানুয়ারি আদালতে পাঁচলাইশ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০১৩ সালের ২৪শে মে পাঁচলাইশ থানার পাশের একটি কমিউনিটি সেন্টার থেকে শিবির আখ্যা দিয়ে ৪০ শিক্ষার্থীকে আটকের ঘটনায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের তোপের মুখে পড়েন ওসি প্রদীপ। ওই সময় ওসি প্রদীপের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের ব্যাপক বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তারা ওসিকে লাঞ্ছিত করেন। এছাড়া পাঁচলাইশে ওসি থাকাকালীন বাদুরতলা এলাকায় বোরকা পরা এক বয়োবৃদ্ধাকে রাজপথে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ব্যাপক সমালোচিত হন প্রদীপ। এ ঘটনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলে টনক নড়ে। ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করা হয়। এক পর্যায়ে ২০১৩ সালের ২১শে আগস্ট তাকে পাঁচলাইশ থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। শুধু তাই নয়, চার বছর আগে একজন সিআইপি শিল্পপতিকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর তৎকালীন বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ২০১৫ সালের ১৬ই নভেম্বর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।

প্রাসঙ্গিকঃ  নিচের লিংকে ক্লিক করে রোমহর্ষক সব তথ্যাবলী সম্বলিত আমার এই ব্লগ পোস্টটি পড়ুন; ওসি প্রদীপদের দৌরাত্ম্যের নেপথ্যে কাহিনী সম্পর্কে  অনেক কিছুই জানতে পারবেন।

বাড়িটির নিচ তলায় হাতের ডান পাশের কক্ষটিতে গিয়ে দেখা যায় মা’মলার অ’সংখ্য গুরুত্বপূর্র্ণ কাগজপত্র। দু’তলায় গিয়ে দেখা মিলে ম’দের বোতল, ইয়াবা খাওয়ার সরঞ্জাম, পু’লিশ সদস্যদের জুুতা, ব্যাংকের খালি চেক, আর্মড পু’লিশের পোশাকসহ পু’লিশ সদস্যদের থাকার নানা আলামত।

অ’ভিযোগ রয়েছে, বাড়িটির মালিক মুদি দোকানি নূর মোহা’ম্মদকে গত বছর দোকান থেকে তুলে নিয়ে ক্রসফা’য়ার দেয় টেকনাফ থা’না পু’লিশ। নূর মোহা’ম্মদের স্ত্রী লায়লা বেগম অ’ভিযোগ করে বলেন, স্বামী নূর মোহা’ম্মদকে গত বছর মার্চ মাসে বাড়ির পাশে দোকান থেকে ধ’রে নিয়ে যায় টেকনাফ থা’না পু’লিশ।

পরে তাদের কাছ থেকে চল্লিশ লাখ টাকা দা’বি করেন পু’লিশ সদস্যরা। পাঁচ লাখ টাকা জোগাড় করে দিলেও শেষ র’ক্ষা হয়নি আমার স্বামীর। তাকে তারা ক্রসফা’য়ার দিয়ে দেয়। ঘ’টনার দুই মাস পরে এখান থেকে আমাদের বের করে দেয়া হয়। বাড়ি থেকে আমাদের কিছুই নিতে দেয়া হয়নি।

পরে ওসি প্রদীপ কুমারকে দলিল দেখালে দলিলটিও তারা নিয়ে নেয়। অ’ভিযোগ রয়েছে, নূর মোহা’ম্মদের স্ত্রী লায়লা বেগমকে তার দুই সন্তান সহ বাড়ি থেকে বের করে দেন ওসি। এরপর থেকে বাড়িটি দখলে নেন এই পু’লিশ কর্মক’র্তা। নিজের বাড়ি থাকতেও লায়লা বেগম মানুষের বাড়িতে বাড়িতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

গত বছরের ঘ’টনা। রাত দু’টা। নাজিরপাড়ায় একটি বাড়িতে এসে হানা দেন ওসি প্রদীপ। সেইদিন রাতে ওই বাড়ির তিন মহিলাকে তুলে নিয়ে যান তিনি। ঘুম থেকে তুলে থা’নায় নিয়ে যান ওই পরিবারের দুই পুত্রবধূকে।

এরপর তিন নারীকে ত্রিশ হাজার ইয়াবা দিয়ে গ্রে’প্তার দেখান তিনি। এর আগে তাদের গায়ে হাত তোলাসহ শ্লী’লতাহানির অ’ভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।  

মিনি টমটম চালক আব্দুল মোত্তালেব ও তার বোন রহিমা আক্তারকে সাক্ষী দেয়ার কথা বলে নিয়ে যাওয়ার চে’ষ্টা করে পু’লিশ। একই সঙ্গে তাদের বাড়িটি ভা’ঙচুর চালানো হয়। কিন্তু রহিমা খাতুন পু’লিশের সঙ্গে না যেতে চাইলে মরিচের গুঁড়া তার নাকে-মুখে ছিটিয়ে দেয়।

পরে ওই নারীকে অ’সুস্থ অবস্থায় ধ’রে নিয়ে যায় পু’লিশ। এই অ’ভিযানে ওসি প্রদীপের নেতৃত্বে উপস্থিত ছিল পু’লিশ সদস্য সাগর, সঞ্জিত দত্ত ও রুবেল। 

এই এলাকার নারীদেরকে শুধু তুলে নিয়ে যাওয়াই নয়, যখন-তখন তাদেরকে শারীরিক নি’র্যাতন করার অ’ভিযোগ রয়েছে টেকনাফ থা’নার পু’লিশের বি’রুদ্ধে। অনেক নারীকে যৌ’ন হ’য়রানির অ’ভিযোগও আছে ওসি প্রদীপের বি’রুদ্ধে। টেকনাফ পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড অলিয়াবাদ গ্রামের একজন নারী যৌ’ন হ’য়রানির অ’ভিযোগ তুলেছে ওসির বি’রুদ্ধে।

অ’ভিযোগ ওঠে ওই নারীকে ওসি প্রদীপ শ্লী’তহানীর চে’ষ্টা করেন। কিন্তু শ্লী’লতাহানী না করতে পেরে তাকে মা’রধর ও লাথি দেন তিনি। নাজির পাড়ার বাসিন্দা দুদু মিয়াকে হ্নীলা থেকে আ’টক করে কথিত ক্রসফা’য়ার দেন ওসি প্রদীপ। গত বছরের রমজান মাসে তাকে আ’টক করে বিশ লাখ টাকা দা’বি করেন ওসির ডান হাত বলে পরিচিতি এএসআই সঞ্জিত। রাতের মধ্যে টাকা জোগাড় করলেও রাতেই তাকে ক্রসফা’য়ার দেয়া হয়।

দুদু মিয়ার স্ত্রী নাসিমা আক্তার অ’ভিযোগ করে বলেন, আমি সঞ্জিতের পায়ে পড়েছিলাম। তখন সে আমাকে লাথি দিয়ে ফেলে দিয়েছে। ওসির কাছে গিয়েছিলাম। উল্টো আমাকে হু’মকি-ধ’মকি দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছে। এর আগে ৫০ লাখ টাকা চেয়েছিল পু’লিশ।


অনাচারের ডায়াগ্রামঃ 
(প্রকাশ্য দিবালোকে ছেলেটিকে গুলি করতে পিস্তল বের করছে জুলুম এবং অনাচারের মূর্ত-প্রতিক খুনী প্রদীপ)

মানুষকে গুলি করার অদম্য নেশা ছিল তার। নিচে সোশ্যাল মিডিয়ার ভাইরাল কিছু ছবির পোস্টঃ  


কক্সবাজারে তান্ডবলীলা চালানোর আগে ওসি প্রদীপের অতীতের পিশাচিপনার গল্পঃ

ওসি প্রদীপের সাথে আমার ভাইরাল ছবিটা নিয়ে অনেকের অনুরোধে কিছু স্মৃতি তুলে ধরলাম...

আপনারা হয়তো ওসি প্রদীপকে আজকের দিনে চিনতেছেন একজন মেজর হত্যার কারণে,
আমার মতো অনেকেই রাজনৈতিক কারণে বা অন্য কোন কারণে ওসি প্রদীপকে অনেক আগে থেকেই জানে..
রাজনৈতিক কারণে কাউকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা,এভাবে নির্যাতনের জন্যই কি দেশটা স্বাধীন হয়েছিল???

বেশি বড় করতে চাই না,সংক্ষেপে বলি..
সেদিন ২০১৩ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারী মসজিদ হতে ধরে নিয়ে অনেককেই গুলি করে।
আমাকে তো গুলি করেছিল বাসা হতে ধরে নিয়ে ছাদে এনে পরপর তার পিস্তলের ৬ রাউন্ড।
নিজ হাতে গুলি করার পর সে ৬ তলা ভবনের ছাঁদ হতে ফেলে দিতে যায়। ভাগ্য সহায়ক, মিডিয়া এসে যাওয়ার কারণে(চ্যানেল ২৪,দিগন্ত টিভি ও আমার দেশ) যার মধ্যে লাইভ কাস্টে ছিল চ্যানেল ২৪।
আশপাশের পুলিশ সদস্যরা বলে স্যার মিডিয়া আসছে, আপনি ছেড়ে দেন।আমরা তাকে নিয়ে যাচ্ছি,
এটা বলার সাথে সাথে পিছন হতে রাইফেল বাট দিয়ে মাথায় আঘাত করে এক চাকমা ডিবি সদস্য।
মাথায় অঝোরে রক্ত ঝরছিল, যার দরুন পড়ে যায় সিঁড়িতেই।
সেই ছয় তলা ভবনের সিঁড়ি হতে লাথি-উষ্টার মাধ্যমে গড়িয়ে গড়িয়ে নিছে নিয়ে আসে।
তারপর ধরে নিয়ে আসে থানায়।
আনার পথে মারা হয়েছে লাঠি দিয়ে প্রচুর।
আপনারা হয়তো জানেন সেদিন জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার রায় ছিল,এবং হরতাল চলছিল।

পরে সে থানায় নিয়ে এসে,অনেককে গুলিবিদ্ধ পড়ে থাকতে দেখি।আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তার(ওসি প্রদীপের) রুমে।
যেখানে রেখেছিল, টাইলস রক্তের ছোপ ছোপ দাগ পড়ে যায়। সেখানে আমাকে নিজের রক্তে পিচ্ছিল টাইলসের উপরে দীর্ঘ ত্রিশ মিনিট পা দিয়ে মাড়ায় ওসি প্রদীপ ও তার পোষা কুকুর গুলো।গলার উপর বুট দিয়ে চেপে ধরে,যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হবার উপক্রম।

এভাবে অসংখ্য ভাইকে রিমান্ডে মরিচ গুড়া,বাহুতে বাঁশডলা দেওয়া, কারেন্ট শক দেওয়া ছিল তার নিত্য নৈমিত্তিক কাজ।
তার পাপ লিখতে গেলে কাগজ শেষ হবে,কিন্তু তার পাপের মাত্রা শেষ হবেনা!


চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার একজন বাহরাইন প্রবাসীসহ দুই ভাইকে তুলে নিয়ে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে হত্যা করেন টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

গত ১৬ জুলাই চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেশব চক্রবর্তীর যোগসাজশে ওই দুই ভাইকে তুলে নিয়ে গিয়ে টেকনাফে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে নিহত’ দুই ভাইয়ের স্বজনরা।

জানা গেছে, করোনাকালীন সংকটে নিরূপায় হয়ে দেশে ফেরেন বাহরাইন প্রবাসী ছোট ভাই আজাদ। দেশে ফেরার ২ মাস ১৪ দিনের মাথায় গত ১৩ জুলাই এক বন্ধুর ফোন পেয়ে চন্দনাইশের কাঞ্চননগর ইউনিয়নের নিজ ঘর থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফেরেননি আজাদ। টানা দুই দিনেও আজাদের কোনো খোঁজ না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার সিদ্ধান্ত নেয় তার পরিবারের সদস্যরা।

ছোট ভাই নিখোঁজ হওয়ার ঠিক দুদিন পর ১৫ জুলাই বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজের সামনের ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে আজাদের বড় ভাই ফারুককে আটক করে নিয়ে যায় চন্দনাইশ থানা পুলিশ।

চন্দনাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারের সদস্যদের জানায়, কোনো মামলা না থাকলেও সন্দেহভাজন হিসেবে ফারুককে আটক করা হয়েছে।

পরিদর্শক (তদন্ত) এও নিশ্চিত করেন, ওসি কেশব চক্রবর্তীর নির্দেশেই ফারুককে আটক করা হয়েছে। ওসি বাইরে গেছেন, তিনি থানায় ফিরলে জিজ্ঞাসাবাদ করে ফারুককে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে তিনি অবশ্য আশ্বস্তও করেছিলেন।

পুলিশের পরামর্শে সন্ধ্যা সাতটার দিকে আবারও স্বজনরা চন্দনাইশ থানায় গেলে জানানো হয় টেকনাফ থানায় ১৪ জুলাই দায়ের করা একটি বন্দুক যুদ্ধ  মামলায় ফারুককে টেকনাফ থানায় পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, থানা থেকে ফেরার কয়েক ঘন্টার মাথায় ফারুক ও আজাদের মায়ের মোবাইলে একটি নাম্বার থেকে ফোন করে অজ্ঞাত পরিচয় একজন বলেন, ‘তোর দুই ছেলে আমাদের কাছে আছে। দুই ছেলেকে জীবিত ফেরত চাইলে রাতের মধ্যে আমাদের ৮ লাখ টাকা দিতে হবে। না হলে সকালে ছেলের লাশ পাবি।’ একথা বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। কিন্তু তারা পুলিশের দাবীকৃত টাকা দিতে পারেনি।

যেমন কথা তেমন কাজ। এর পরদিন ১৬ জুলাই সকাল ৮টার দিকে টেকনাফ থানা থেকে তাদের মায়ের নাম্বারে ফোন করে জানানো হয় দুই ভাই আজাদ ও ফারুক টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

পরিবারের কেউ এই বিষয়ে কথা বলতে রাজি না হলেও অনুসন্ধানে জানা গেছে, বছর দুয়েক আগেও ফারুকের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগ ছিল। সে সময়ে বিষয়টি জানাজানি হলে ফারুকের মা এলাকাবাসীকে ডেকে রীতিমতো বিচার বসিয়েছিলেন নিজের ছেলের বিরুদ্ধেই। এই পথ থেকে সরে না আসা পর্যন্ত ফারুককে নিজের ছেলে বলে পরিচয় দেবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সে সময় ফারুককে বাড়ি থেকে বেরও করে দেন তার বৃদ্ধা মা। পরে মা ও এলাকাবাসীর চাপে মাদক ব্যবসা ছেড়ে দেন ফারুক। তবে সবসময় একটা ভয়ে থাকতেন তিনি।

স্থানীয় একজন সমাজকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মায়ের কট্টর অবস্থানের কারণে বছর খানেক আগ থেকে ইয়াবা ব্যবসা ছেড়ে দেয় ফারুক। কিন্তু তার একটা ভয় ছিল। যে এই লাইন ছেড়ে দিলে সে বিপদে পড়তে পারে। এই কারণে সে আলাদা বাসায় থাকতো। আমাদের ধারণা তার ভয়টাই সত্যি হয়েছে। ব্যবসা ছেড়ে দেওয়ার মাশুল হিসেবেই তার ওপর ক্ষোভ ছিল এই চক্রের সদস্যদের। আর এই কারণে তার ছোট ভাইকে তুলে নিয়ে গিয়ে তার কাছ থেকে ফারুকের ঠিকানা বের করেন। পরে দুই ভাইকে এক সাথেই বন্দুক যুদ্ধের নামে হত্যা করা হয়।’

টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় দায়িত্বরত অবস্থায় ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়দের অনেকে। এমনি এক ঘটনায় ওসি প্রদীপের শাস্তি দাবি করেছেন এক ভুক্তভোগী পরিবার। ঘর থেকে ধরে নিয়ে মহেশখালির দিনেশপুর ঢালায় ক্রসফায়ারে জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেয় মালেক নামে এক লবন চাষির। এ নিয়ে বাংলা টিভিতে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন।

ফেইসবুক পোস্টের লিংক(ভিডিও)   



আরেকটি হত্যা মামলা (২৬/০৮/২০২০):
টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজার এলাকার নুরুল হোছাইন বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। বাদী অভিযোগ করেছেন, তার ভাই মাহামুদুল প্রবাস থেকে ফেরত আসার পর পুলিশ তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ টাকা না দেওয়ায় ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ তার ভাইকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। ছেড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিলেও ৩১ মার্চ তার ভাইকে বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করা হয়।
বাদী জানান, তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। পরিকল্পিতভাবে তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। এর পর থেকে পুলিশ তাদেরকে ধারাবাহিকভাবে হুমকি প্রদান করেছে। নিরাপত্তার অভাবে এতদিন মামলা করার সুযোগ ছিল না। এখন সুযোগ হয়েছে, তাই মামলা করেছেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী কাসেম আলী জানান, এজাহারটি পর্যালোচনা করে আদালত আগামী ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ সংক্রান্ত টেকনাফ থানায় সেই সময় দায়ের করা মামলার বিস্তারিত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে আদেশ দিয়েছেন। প্রদীপ দাশ টেকনাফের ওসি থাকাকালে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দেড় শতাধিক লোক নিহত হয়েছেন। তাদের অনেকেই নিরপরাধ ছিলেন বলে স্বজনরা দাবি করেছেন। মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন প্রদীপ দাশ।

ডিম থ্যারাপি খেয়ে সব ফাঁস করল ওসি প্রদীপ! দেখুন তার সাথে জড়িত ছিল যেসব বড় বড় নেতারা।

ফেইসবুক পোস্টের লিংক (ভিডিও)




টেকনাফ থানার কুখ্যাত ওসি প্রদীপ কুমার দাস ছিল মূলত দেশের সর্বদক্ষিণের দুই সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ উখিয়ার স্বঘোষিত রাজা। ফলে প্রশাসনিকভাবে প্রদীপ টেকনাফের ওসি হলেও বেআইনীভাবে তিনি উখিয়া থানা এলাকা থেকে টার্গেটকৃত ব্যাক্তিদের ধরে নিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করতো। 

ওসি প্রদীপের নির্যাতন, চাঁদাবাজিম লুটপাট, হামলা-মামলা এবং কথিত বন্দুকযুদ্ধের শিকার হয়ে শত শত পরিবার নি:স্ব হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ওসি প্রদীপ ও তার কয়েকজন সহযোগী মেজর সিনহা হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর   এখনে সেসব পরিবারে অনেকে এলাকায় ফিরছে। উদ্যোগ নিচ্ছে আইনী মোকাবেলার।

গ্রেফতার হওয়ার মাত্র ১০দিন আগেই রোমহষর্ককভাবে হত্যা করে বখতিয়ার মেম্বারকে (সরেজমিন প্রতিবেদন)



ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকির দেয়া সম্পদের তথ্য যাচাইয়ে ব্যাপক গড়মিল খুঁজে পায় দুদক। প্রমাণ মেলে প্রায় ৪ কোটি টাকার সম্পদই অবৈধভাবে অর্জিত। যার সবটারই নেপথ্যে প্রদীপ। তাই দুয়েকদিনের মধ্যেই মামলা করতে যাচ্ছে দুদক।

দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, চুমকি সম্পদের পাহাড় গড়েছেন স্বামী প্রদীপের অবৈধ অর্থে। শুধু তাই নয়, স্ত্রীর সম্পদের বৈধতা পেতে শ্বশুরের নামে জমি নিয়ে বাড়ি বানিয়েছেন প্রদীপ। পরে তার স্ত্রীকে দানের নামে সাজানো হয় নাটক। বোনের জায়গা দখল করেও সাজায় কেনার অলিক গল্প। তার স্ত্রী কমিশন ও মৎস ব্যবসায়ী দাবি করলেও তা সঠিক নয় বলে প্রমাণ পায় দুদক।

বিস্তারিত প্রতিবেদন


(টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি)

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের দায়ে টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার বিকেলে চট্টগ্রামে এ মামলাটি করা হয়।

দুদকের সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রদীপের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে আরও সম্পদ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। তার আরও কোন অবৈধ কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা আছে কিনা খুঁজে দেখা হবে। এরপর চার্জশিট ও বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।

বিস্তারিত প্রতিবেদন



দেখুন স্বামী-স্ত্রীর (প্রদীপ ও চুমকি) বিরুদ্ধে যমুনা নিউজ এর ভিডিও প্রতিবেদনঃ

৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ; স্ত্রীসহ ওসি প্রদীপ বিরুদ্ধে দুদক'র মামলা


ওসি প্রদীপ ও ওসি মর্জিনা যে ভাবে বখতিয়ার মেম্বারকে হত্যা করে ৫১লাখ টাকা লুট করে ওসি প্রদীপ ও মর্জিনা। পুরো প্রতিবেদনটি ইউটিউবে দেখতে  নিচের লিংকে ক্লিক করুনঃঃ 

২ ওসি মিলে ৫১লাখ টাকা লুটের ভিডিও প্রতিবেদন


 ওসি প্রদীপের টর্চার সেলের রোমহর্ষক গল্পঃ   

টেকনাফ থা’নায় ওসি (অ’পারেশন) পদে ছিলেন প্রদীপ কুমার দাশ। তার নেতৃত্বাধীন টিমটিকে ‘ওসির টিম’ বলা হতো। এই টিমে থা’নার কয়েকজন কর্মক’র্তাসহ পুরো থা’না এলাকাজুড়ে অনেক সোর্স জ’ড়িত রয়েছেন। থা’নায় এছাড়াও ওসি (ত’দন্ত) বলে আরেকজন ওসি দায়িত্বরত আছেন।

তার টিমের বি’রুদ্ধেও আছে নানা অ’ভিযোগ। তবে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার নেতৃত্বাধীন ওসির টিমের বি’রুদ্ধেই সাধারণ মানুষের অ’ভিযোগ বেশি। এই টিমের নেতৃত্বে থা’নার তিন তলায় ‘ট’র্চার সেল’ পরিচালনার অ’ভিযোগও করেছেন অনেক ভু’ক্তভোগী। এমনই একজন ভুক্তভোগী ফরিদা বেগম ওরফে কাজল।

এ বছরের শুরুতে মা’দক চো’রাচালানের অ’ভিযোগে এই নারীসহ তার ভাই আবদুর রহমান এবং স্বামী আবদুল কাদেরকে আ’টক করেছিলেন ওসি প্রদীপ কুমার দাস। দুই দিন থা’নায় আ’টকে রেখে নি’র্যাতনের পর ফরিদা বেগম ওরফে কাজলকে ইয়াবা দিয়ে কোর্টে চালান দেওয়া হয়। তবে বাঁ’চতে পারেননি কাজলের ভাই আবদুর রহমান এবং কাজলের স্বামী আবদুর কাদের।

পু’লিশের হাতে ধ’রা পড়ার পড়েও কথিত ‘ক্রসফা’য়ারে’ নি’হত হন তারা। এ প্রসঙ্গে ফরিদা বেগম ওরফে কাজল বলেন, ‘ঘর থেকে আমাদের তিনজনকে জো’র করে ধ’রে থা’নায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থা’না ভবনে তিনতলায় একটি কক্ষে আলাদা করে আমাদের ওপর ব্যাপক নি’র্যাতন চালায়।

এসময় আমাকে চোখ মুখ বেঁ’ধে মা’রধর করে। এতে মু’মূর্ষু হয়ে পড়ি। এরপরের দিন ৩শ’ পিস ইয়াবা দিয়ে কক্সবাজার কারাগারে পাঠায়। এসময় আমার গলায় থাকা একটি স্বর্ণের চেইন ছিল সেটি থা’নার কম্পিউটার অপারেটর রাজু জো’র করে নিয়ে নেয়। তখনও জানা ছিল না আমার ভাই আবদুর রহমান এবং স্বামী আবদুর কাদের এর পরিণতি কী হয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরের দিন জানতে পারলাম তারা দুইজনকে গু’লি করে হ’ত্যা করা হয়েছে। শুনে আমার হাত-পা অবশ হয়ে পড়ে। ভাই মিস্ত্রি ও স্বামী সিএনজিচালক ছিলেন। কী এমন দোষ ছিল তাদের গু’লি করে মা’রা হয়েছে? আমাদের থাকার মতো একটি ঘরও ছিল না। আমরা কেমন করে ওসির জন্য লাখ লাখ টাকা ঘুষ দেবো?’

তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, ‘এইখানে এমন বর্বরতাই চলছিল ওসি প্রদীপের আমলে।’ এদিকে টেকনাফের স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, বিশ্বস্ত দুটি টিমের মাধ্যমে ওসি প্রদীপ তার সাম্রাজ্য নি’য়ন্ত্রণ করতেন। প্রদীপের টিমের নাম ছিল ‘ওসির টিম’। টিমের সদস্যদের দিয়ে প্রদীপ তার নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেন।

ওসি প্রদীপের টর্চার সেল ছিল টেকনাফ থানার ৩য় তলায়


দৈনিক ইনকিলাবের অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনঃ   

* মাদক নির্মূলের নামে যেন টেকনাফ পুলিশের হাতে দেয়া হয়েছে মানুষ হত্যার লাইসেন্স! গত দুই বছরে শুধু টেকনাফে ১৪৪ টি কথিত বন্দুকযুদ্ধের সাজানো ঘটনা ঘটেছে। আর এসব বন্দুকযুদ্ধের নামে ওসি প্রদীপ কুমার ২০৪ জন মানুষ গুলি করে হত্যা করেছে।

* সর্বশেষ ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফে পুলিশের বেপরোয়া গুলিতে নিহত হয়েছেন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এই ঘটনায় দেশজুড়ে এখন তোলপাড় চলছে।

* একটি গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে জানাগেছে, থানার ওসির নির্দেশ ছাড়া কোন অফিসার গুলি চালাতে পারে না। ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী বিবরণ থেকে গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয়েছেন। গুলি করার আগে এসআই লিয়াকত তার মোবাইল ফোন থেকে ওসি প্রদীপের সাথে কথা বলে তার নির্দেশেই সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খাঁনকে গাড়ি থেকে নামিয়ে কোন কথা বলতে না দিয়েই সরাসরি বুকে পর পর তিনটি গুলি করেন।

* এদিকে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) গোপন তদন্ত প্রতিবেদনে স্থানীয় টেকনাফ থানা পুলিশের বিরুদ্ধে সন্দেহভাজন অপরাধীদের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, “হত্যার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত থাকা পুলিশ একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যায়ও কোনরূপ দ্বিধা করেনি।

* বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে টেকনাফের বির্তর্কিত ওসি প্রদীপের কথিত ক্রসফায়ারের নামে বিচার বর্হিভূত গণহত্যার কারণে পুলিশ যে কাউকে হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করছে না। যার শেষ পরিণতি মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খাঁন।

* অভিযোগ রয়েছে ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর ওসি প্রদীপ টেকনাফে যোগদান করেন। এর পর থেকে গত দুই বছরে শুধু টেকনাফে ১৪৪টি কথিত বন্দুক যুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। আর এসব বন্দুকযুদ্ধের নামে ওসি প্রদীপ কুমার ২০৪জনকে গুলি করে হত্যা করেছে।

* মূলত ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীর ট্যাগ লাগিয়ে নিরীহ এবং অনেক ধনাঢ্য লোকজনকে থানায় ধরে নিয়ে মোটা অংকে অর্থের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। যারা টাকা দিতে পারে না তারাই ভাগে জুটে ক্রসফায়ারের নামে নির্মম মৃত্যু। অভিযোগ আছে অনেকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে খুশী হতে না পেরে তাদের বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে তাদেকে খুন করেছে ওসি প্রদীপ। বিস্তারিত নিচের লিংকেঃ 

টেকনাফ পুলিশের হাতে মানুষ হত্যার লাইসেন্স!


 কেবল টাকা পেলেই ক্রসফায়ার দেননা ওসি প্রদীপ 

( উপরে প্রদত্ত সংবাদটির প্রতিবেদককে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে রোমহষর্ক নির্যাতন করা হয়)    

দু’র্নীতি ও অ’নিয়মের সং’বাদ  প্রকাশের জে’রে ‘কক্সবাজার বাণী’ পত্রিকার সম্পাদককে মা’দক মা’মলায় ফাঁ’সানোর অ’ভিযোগ উ’ঠেছে টেকনাফ থানার ও’সি প্রদীপ কুমার দাসের বি’রুদ্ধে।

অনুসন্ধানে জানাগেছে , ওই সাং’বাদিকের প’রিবারকে নানাভাবে হ’য়রানি করছেন টেকনাফ থানার ও’সি প্রদীপ কুমার দাস। কোনো পরোয়ানা ছাড়াই ঢাকার পল্লবী থেকে তাকে ধ’রে নিয়ে টেকনাফ থানায় তিন দিন আ’টকে রেখে অ’মানুষিক নি’র্যাতন করা হয়। পরে মি’থ্যা মা’মলা দিয়ে আ’দালতে পাঠানো হয় সাং’বাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানকে।

(ওসি প্রদীপের রোষানলে পড়ে বানোয়াট মামলায়  সেই সাহসী ক্রাইম রিপোর্টার ফরিদুল মোস্তফা)   

২০১৯ সনে বাংলাদেশ ক্রা’ইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফরিদুল মোস্তফার স্ত্রী হাসিনা আক্তার লিখিত বক্তব্যে এসব অ’ভিযোগ জানান।

তিনি জানান, ‘তার স্বা’মী বিভিন্ন সময় টেকনাফ থানার ও’সিসহ পুলিশ স’দস্যদের নানা অ’নিয়ম ও দু’র্নীতির সং’বাদ প্র’কাশ করেছেন। এ কারণে তাকে ২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর এলাকার বাসা থেকে ধ’রে নিয়ে শা’রীরিক নি’র্যাতন করে মি’থ্যা মা’মলায় ফাঁ’সানো হয়েছে।

তার চো’খে ম’রিচের গুঁ’ড়া দিয়ে নি’র্যাতন করায় বর্তমানে দুটি চোখই ন’ষ্ট হওয়ার উ’পক্রম হয়েছে। এ ছাড়া তার হা’ত-পা ভে’ঙে দিয়েছে পু’লিশ। চি’কিৎসক জানিয়েছেন তার এক চো’খ ন’ষ্ট হয়ে যেতে পারে’।

ফরিদুল মোস্তফার মে’য়ে সুমাইয়া মোস্তফা খান স্বাধীন নিউজ২৪কে বলেন, ‘তাদের পরিবারের কেউ কোনো মা’মলার আ’সামি নয়। কখনো তারা কোনো অ’নিয়মে জড়াননি। এরপরও পু’লিশ ঠা’ন্ডা মাথায় তারা বাবাকে মা’মলা দিয়ে সমাজে তাদের প’রিবারটিকে হে’য় করেছে’।

মরিচের গুড়ো দিয়ে ক্রাইম রিপোর্টারের চোখ নষ্ট করে দেয় খুনী প্রদীপ


৩৫ সদস্যের বাহিনী নিয়ে গড়ে ওঠেছিল ওসি প্রদীপের অপরাধ সাম্রাজ্যঃ

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, প্রদীপের প্রাইভেট বাহিনী ছিল গোটা টেকনাফ এলাকার আতঙ্ক। এই বাহিনীর কয়েকজন সদস্যের নাম হাতে এসেছে তদন্তকারী দলের। সদস্যরা হলো- ফোম কামাল, সাব্বির আহমেদ, তুলা আজিজ, ইয়াবা ডন শাহিন, লাংড়া সোহেল, সাজ্জাদ, মুরগি মিলন, দস্যু রেজাউল, মাঝি রহিম শেখ, গোর্কি কামাল ও শরিফ আহমেদ। তাদের বয়স সবার ২৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে। আরো যারা এই প্রাইভেট বাহিনীর সদস্য ছিলেন তাদের সন্ধান চালাচ্ছে র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সূত্র জানায়, প্রদীপ টেকনাফের ওসি হওয়ার পরই আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেই এই প্রাইভেট বাহিনী গড়ে তুলেন। এই বাহিনীর মধ্যে ৩টি ভাগ ছিল। একটি স্থানীয় এলাকায় বড় ইয়াবাকারবারীদের নিয়ন্ত্রণ করতো, আরেক দল বিভিন্ন সেক্টর থেকে চাঁদাবাজি করতো, আরেকটি গ্রুপ জলদস্যুতা করতো।

সূত্র জানায়, যেসব জলদস্যু কক্সবাজারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলো তার মধ্যে ওই বাহিনীর কেউ ছিল না।

সূত্র জানায়, প্রাইভেট বাহিনীর আরেকটি কাজ ছিল ইয়াবা চালানের অন্যতম রুট টেকনাফের ইয়াবা কারবার নিয়ন্ত্রণ করা। পুলিশি কৃতিত্ব দেখানোর জন্য খুচরা ব্যবসায়ীদের ধরা ও ক্রসফায়ারে দিয়েছে প্রদীপ। কিন্তু, বড় কারবারিরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। তার এই চালাকির কাজ সম্পন্ন করেছে প্রাইভেট বাহিনীর সদস্যরা। এই প্রাইভেট বাহিনীকে আবার প্রদীপ প্রথাগত সোর্স বানিয়েছিল। যারা ওসির নাম করে এলাকায় অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল।

বিস্তারিত নিউজ


নতুন আরেকটি খুনের মামলা ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধেঃ

এডভোকেট ইনসাফুর রহমান জানিয়েছেন, গত ৪ জুলাই সকালে বাদী গোল চেহেরের দুই সন্তান সাদ্দাম হোসেন ও মো. জাহেদ হোসেনকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাদেরকে ছেড়ে দেবে বলে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় মৃত লাশ প্রদান করা হবে বলে হুমকি দেয় টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমান।

পরে পৃথকভাবে ৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। কিন্তু তাদের ছেড়ে না দিয়ে মো. জাহেদ হোসেনকে আদালতে সোপর্দ করলেও মো. সাদ্দাম হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে। এ মর্মান্তিক ঘটনায় মশিুউর রহমানকে এক নম্বর ও প্রদীপ কুমার দাশকে দুই নম্বর আসামি করে ২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ওসি প্রদীপসহ ২৮জনের বিরুদ্ধে নতুন খুনের মামলাঃ


আরো পড়ুনঃ

টেকনাফে ক্রসফায়ার মামলায় পুলিশের বাণিজ্যের অভিযোগ

ওসি প্রদীপ ও মর্জিনার ক্রসফায়ার ফাঁদ

মূলতঃ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের স্বার্থেই ক্রসফায়ার দিতো ওসি প্রদীপ 

টেকনাফ থেকেই যেভাবে ২০০ কোটি টাকা কামিয়েছে ওসি প্রদীপ!

৭৭ লাখ টাকা নেয়ার পরও ‘ক্রসফায়ার’ দিয়েছিলেন ওসি প্রদীপ


আমার অন্য দু'টি প্রাসঙ্গিক ব্লগ পোস্টঃ

মেজর রাশেদ সিংহা হত্যাকাণ্ডঃ অনুসন্ধান ও বিশেষজ্ঞ মতামত

ঔদ্ধ্যত্বপূর্ণভাবে মেজর সিনহাকে হত্যাঃ যা ঘটেছিল সেদিন

নারী নির্যাতনকারী নারী ওসিঃ মর্জিনা

ওসি প্রদীপ ও ওসি মর্জিনার নেতৃত্বে উখিয়া ও টেকনাফে ক্রসফায়ারের রামরাজত্ব! 


♦💖♦ সদয় দৃষ্টি আকর্ষণঃ ♦💖 

(মতামত/কমেন্ট কোথায় করবেন? ) 

ফেইসবুক পোস্টের মতোই  এখানেও (পোস্টের একেবারে নিচে গিয়ে স্ক্রিনশটে লাল দাগ দ্বারা চিহ্নিত স্থানে)   

ভালো মন্দ, পক্ষে-বিপক্ষে কমেন্ট করা যায়

পাশাপাশি, ওই কমেন্ট বক্সে এই ব্লগের সাথে সম্পৃক্ত যে কোন ধরনের নিউজ লিংকও কমেন্ট পোস্ট করতে পারেন।

আপনাদের মূল্যবান মতামত আমার ব্লগিংয়ের অনুপ্রেরণা ।  সবাইকে ধন্যবাদ।


👇👇👇 নিচে কমেন্ট বক্স👇👇👇






Comments

Popular posts from this blog

সচিবালয়কে 'হিন্দু-আলয়' -এ রূপান্তর! নেপথ্যে কারা? কি হতে চলেছে বাংলাদেশে?

জাপানে বাংলাদেশী রসায়ন বিজ্ঞানীর অনন্য আবিষ্কারঃ করোনার 'সাময়িক প্রতিরোধ' ও "চিকিৎসা" কেবল ১টি মাত্র ওষুধেই ( One Medicine Treatment)

কাল্পনিক অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ডানপন্থী ব্লগারদের দুঃখের দিনের কান্ডারী ফারাবির নিঃশর্ত মুক্তি চাই