করোনা-ভাইরাসের পেছনে পেছনে দৌড়ানো বনাম সামনে থেকে মোকাবেলা

করোণা-ভাইরাসের পেছনে পেছনে  দৌড়ানো অথবা সামনে থেকে মোকাবেলা করা বলতে কি বুঝায়?
**********************************
১. ভাইরাসের পেছনে পেছনে  দৌড়ানোঃ
মহামারী আক্রান্ত কোন দেশ যদি কেবল আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবার কিংবা আক্রান্ত  এলাকা বা শহরগুলিই লক ডাউন তথা আইসোলেট করে রাখে, এটাকে বলে "ভাইরাসের পেছনে পেছনে দৌড়ানো।"

উদাহরণঃ বিশ্বাস করা হয় যে, ইরান, আমেরিকা, ইটালি, স্পেন, ফ্রান্স, ইউকে..... ইত্যাদি দেশগুলি এই জটিলতার ফাঁদে পড়ার কারণে 'সেভিয়ারিটি' ভয়াবহভাবেই বেড়ে গেছে। কাজেই, পরবর্তীতে নেশন-ওয়াইড লক ডাউন করার পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে!

*** দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশও এই "বিপদজনক ভুলপথে" হাটছে! জনৈক মন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন, "এখনো ততোটা ছড়ায়নি!" আর মানে, আগে ৫৬ হাজার বর্গমাইল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ুক, তারপর ওনারা মহা বীর-বিক্রমে মোকাবেলা করবেন, এরকম কিছু?

২. ভাইরাসের সামনে থেকে মোকাবেলা করাঃ
যেকোন Worldwide Pendamic মোকাবেলার সঠিক পদ্ধতি হলো, আক্রান্ত পরিবার এবং এলাকাগুলির পাশাপাশি "০-পেশেন্ট ফ্যামিলি এবং এরিয়াগুলিও" অধিকতর কঠোরতার সাথে আইসোলেট করে রাখা, যাতে ভাইরাস নিজেই পিছিয়ে পড়ে.... অর্থাৎ কিছু নিদ্রিষ্ট গন্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। পাশাপাশি,  Mass testing অব্যাহত রাখা। এটাকেই বলে, "সামনে থেকে ভাইরাস মোকাবেলা।"

উদাহরণঃ সৌদি আরব, আরব আমিরাত, দক্ষিণ কোরিয়া, সিংগাপুর, উত্তর কোরিয়া, তুরস্ক, কানাডা ও থাইওয়ান, শ্ররীলংকা এর পাশাপাশি ইউরোপের দেশ জার্মানও এই পদ্ধতি অবলম্বন করার কারণে আক্রান্তের সংখ্যা এমনকি মৃত্যুহারও এখনো পর্যন্ত তুলনামূলকভাবে যথেষ্ট কম, আলহামদুলিল্লাহ।

*** বাংলাদেশে Mass Testing এর সুযোগ ও সম্ভাবনা কতটুকু ?
দুর্ভাগ্যজনকভাবে,  আমাদের দেশে Mass Testing দূরে থাক, Covid19 এর উপসর্গগুলি হুবহু দৃশ্যমান হওয়ার পরও বিভিন্নস্তরের শ্বাসযন্ত্রের রোগীদেরকে অকল্পনীয়ভাবে, অবর্ণনীয় হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রে! করোনা-ভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের অপর্যাপ্ত প্রস্তুতি এবং টেস্ট-কিট সংকটকেই এসবের জন্য দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা ।

তবে, বাস্তবতা হলো, অন্ধ হলেই প্রলয় বন্ধ হয়না। মহামারী ঠেকাতে ব্যাপকহারে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোন বিকল্প নেই। বর্তমানে সিংগাপুর-মালয়েশিয়া-সৌদি আরব-কানাডা- দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলি যেখানে বাড়ি বাড়ি পুলিশ পাঠিয়ে নিশ্চিত হতে চাইছে যে, "করোনার উপসর্গ বিদ্যমান আছে এরকম কেউ যেন টেস্ট-করা থেকে বাদ পড়ে না যায়," সেখানে আমাদের দেশে ব্যাপক উপসর্গযুক্ত মুমূর্ষু রোগীরাও ৫/৬ টা হাসপাতাল ঘুরে ইস্পিত টেস্ট করাতে ব্যর্থ হচ্ছেন; যা খুবই দুঃখজনক! হৃদয়বিদারকভাবে, কেউ কেউ আবার মৃত্যুর পরই সুযোগ পাচ্ছেন কাংখিত Covid19 টেস্ট করার!

১৮কোটি মানুষের জীবন বাঁচাতে সরকারকে অবশ্যই অবিলম্বে ব্যপক রাষ্টীয় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের যথাসময়ে, হয়রানিমুক্তভাবে Covid19 টেস্ট করার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

পাশাপাশি, বিভিন্ন এনজিও ও দাতব্য সংস্থাগুলিও সরকারকে এক্ষেত্রে সহযোগীতা করার জন্য এগিয়ে আসা সময়ের দাবি। তবে, মনে রাখতে হবে যে, এক্ষেত্রে দ্রুত ফলাফল সুবিধাসহ  Mass testing প্রক্রিয়া একটি বিকল্পহীন সমাধান .... যদি আপনি ইটালি, ইরান, স্পেন, ফ্রান্স, ইউকে, আমেরিকার মতো পরিণতি না চান।
----

ব্যক্তিগত/পারিবারিক পর্যায়ে কিভাবে এগিয়ে থাকবো? 
উপরের স্ট্রাটেজি দুইটা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আলোচনা করা হয়েছে। আর ব্যক্তিগত পর্যায়ে যদি বলেন,

১. ভাইরাসের পেছনে থাকা মানে আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ অসুস্থ হওয়ার পর যথাযথ চিকিৎসা ও সতর্কতা অবলম্বন করা।
T-Zone যা স্পর্শ না করার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরী 
২. আর আপনি বা আপনার পরিবার ভাইরাসের থেকে এগিয়ে থাকা মানে হলো, আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ সম্পূর্ণ সুস্ত থাকতেই অসুস্থ ব্যক্তির চাইতেও দ্বিগুণ সতর্ক থাকতে হবে এবং "কঠোরভাবে হোম কোয়ারেনাইন" তথা "সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং" এর নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে। আর নিয়মিত হাত-ধোয়া এবং T-Zone স্পর্শ না করা ইত্যাদি ক্লিনিক্যাল ইন্সট্রাকশন অনুসরণের ব্যাপারেও সর্বোচ্চ যত্নবান হতে হবে।

পাশাপাশি, যেকোন ধরণের অসুস্থতা অনুভব করার সাথে সাথেই ফোনে বা অন্য কোনভাবে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া এবং সমস্যা বেড়ে গেলে কোন হাসপাতালে কোন প্রক্রিয়ায় ভর্তি হতে হবে তা আগাম জেনে নেওয়া যাতে "চূড়ান্ত " বিপদের মূহুর্তে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে দৌড়াদোড়ি করতে না হয়।

**** সর্বোপরি, আল্লাহর কাছে সবাই পানাহ চাই। আল্লাহ যেন আমাদেরকে এই মহা-দুর্যোগ থেকে রেহাই দেন, আমিন।

Relevant:
সমালোচকদের মুখ বন্ধ না করে প্রকৃত তথ্য দেওয়ার আহ্বান এইচআরডব্লিউ  এর।
------------------
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে লেখালেখির কারণে গত ২৪ মার্চ পুলিশ শহীদুল ইসলাম ও আবদুল আহাদকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে ‘গুজব’ ছড়ানোর অভিযোগে মামলা করা হয়। ২২ মার্চ ডিবি পুলিশ সোহেল শেখ ও আনাম শেখকে পিরোজপুর থেকে আটক করে ফেসবুকে করোনাভাইরাস নিয়ে অপপ্রচার করা অভিযোগে। আর ১৯ মার্চ র‍্যাব খুলনা থেকে মিরাজ আল সাদিকে ফেসবুকে করোনাভাইরাস নিয়ে উসকানিমূলক লেখার কারণে আটক করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, আটকের ক্ষেত্রে বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদেরও টার্গেট করা হচ্ছে। চট্টগ্রামে বিএনপির সমর্থক এক চিকিৎসককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক করা হয়।

ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ফেসবুক ও টেলিভিশনের ওপর নজরদারি করে মানুষকে গ্রেপ্তার না করে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের উচিত এই শক্তিটা ভাইরাস দমনে কাজে লাগানো। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের কাজে স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং ভাইরাসের বিস্তার ও প্রভাব সম্পর্কে প্রত্যেকে যেন সঠিক তথ্য পায়, তা নিশ্চিত করা উচিত সরকারের।
https://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1648267

The whole town was put into quarantine and every inhabitant was tested. The tests were processed by us at the University of Padua. It became clear that this was a unique epidemiological setting – and an application was put in to keep the town in lockdown and run a second round of tests after nine days.

In the first round of testing, 89 people tested positive. In the second round, the number had dropped to six, who remained in isolation. In this way, we managed to eradicate coronavirus from Vò, achieving a 100% recovery rate for those previously infected while recording no further cases of transmission.
https://www.theguardian.com/commentisfree/2020/mar/20/eradicated-coronavirus-mass-testing-covid-19-italy-vo

In mid-February, a 38-year-old man in Codogno, a small town just outside Milan, became the first known person to be infected with the new coronavirus in Italy.

The reaction by local authorities was swift. The roughly 50,000 people who live in Codogno and nearby towns were told to only leave their homes if absolutely necessary, and the area was sealed off from the rest of Italy.

Now, three weeks later, even as the Italian government has locked down the entire country, Codogno is almost free of the virus, recording just a few new infections each day.

The sharp fall in new cases in Codogno and surrounding towns in the heart of the outbreak—from an average of about 100 new cases per day in early March to an average of under 50 per day in recent days—is an early indication that the drastic containment measures that have since been imposed across Italy and elsewhere in Europe could be beginning to work.

Codogno’s experience “tells us that if you introduce social distancing earlier, you will have a lower spread of cases, and if you have a lower spread, you will have fewer deaths,” said Melinda Mills, a professor of sociology at Oxford University who co-wrote a paper on the transmission of Covid-19, the disease caused by the virus.
https://www.wsj.com/articles/lockdown-of-recovering-italian-town-shows-effectiveness-of-early-action-11584391837

Beijing is pushing wild conspiracy theories about the origin of the virus, hoping to deflect attention from the tragic results of its early cover-up.

Others are following China’s example. In Thailand, Cambodia, Venezuela, Bangladesh, and Turkey, governments are detaining journalists, opposition activists, healthcare workers, and anyone else who dares to criticize the official response to the coronavirus. Needless to say, ignorance-is-bliss is not an effective public health strategy. 
https://www.wsj.com/articles/lockdown-of-recovering-italian-town-shows-effectiveness-of-early-action-11584391837

প্রাসঙ্গিকঃ
১. শেখ হাসিনার মুজিববর্ষ বনাম ইমরান খানের প্রণোদনার মহাপরিকল্পনা! 
https://bloggerosman112.blogspot.com/2020/04/blog-post_10.html?spref=tw

২. নুন্যতম প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্টস ছাড়াই ডাক্তারদেরক "করোনা-ভাইরাস" এর মুখোমুখি হতে বাধ্য করছে সরকার।
https://bloggerosman112.blogspot.com/2020/03/blog-post_21.html?spref=tw


#Covid19
#CoronaVirus
#Pendamic
#Epidemic_break_out
#Out_break
#Doctors
#Patients
#Hospitals
#ProtectiveEquipments
#DoctorsSafety
#SaveTheDoctors
#StayAtHome

Comments

Popular posts from this blog

সচিবালয়কে 'হিন্দু-আলয়' -এ রূপান্তর! নেপথ্যে কারা? কি হতে চলেছে বাংলাদেশে?

জাপানে বাংলাদেশী রসায়ন বিজ্ঞানীর অনন্য আবিষ্কারঃ করোনার 'সাময়িক প্রতিরোধ' ও "চিকিৎসা" কেবল ১টি মাত্র ওষুধেই ( One Medicine Treatment)

কাল্পনিক অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ডানপন্থী ব্লগারদের দুঃখের দিনের কান্ডারী ফারাবির নিঃশর্ত মুক্তি চাই