প্রতিবেশী ইন্ডিয়ায় চলছে করোনার প্রলয় নৃত্য! সতর্ক হওয়ার এখনই শেষ সুযোগ।


ভারতে শ্মশানে লাশের লাইন, ফ্রিজে বাবার লাশ নিয়ে ছেলে |
এক দু’ঘণ্টা নয়, ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টা বসে রয়েছেন কেউ কেউ। যে প্লাস্টিকের থলিতে লাশ মোড়া রয়েছে, তার উপর নাম, নম্বর লেখা থাকায় হাতছাড়া হওয়ার ভয় নেই। তাই একটানা বসে না থেকে বাইরে থেকে মাঝেমধ্যে পোড়া লাশের গন্ধ এবং ধোঁয়া থেকে বেরিয়ে একটু তাজা শ্বাস নিয়ে আসছেন অনেকে।

কিন্তু বাইরে বেরিয়েও যে প্রাণভরে শ্বাস নেবেন তার উপায় নেই। সেখানেও লাশ নিয়ে সারি সারি অ্যাম্বুল্যান্স এবং গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। তখনও ধাক্কা সামলে উঠতে না পারা কয়েকজন কাদছেন। কোনখানে দাঁড়াবেন বুঝতে পারছেন না। তাতে বাকিরাও রীতিমতো অপ্রস্তুত।



#####সাবধান--সাবধান ########

উড়িষ্যায় হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে বৃদ্ধা ছেলের সামনে এক মায়ের হাত পা ভাঙ্গা হচ্ছে যাতে সহজে কাঁধে করে লাশ বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেন।


এটা কোন্ ধর্মের প্রথা সেটাও আলোচ্য বিষয় নয়। 
যেটা ভাবার বিষয় তা হল আজ বিশ্বে অসহায় মানুষের জন্যই কি কোন একটি রাষ্ট্র আছে নাকি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্যই রাষ্ট্র তার সকল সুযোগ সুবিধা নিয়ে হাজির থাকে? মজলুম মানবতার আর্তনাদ শোনার কোন রাষ্ট্র বিশ্বে নেই। এটাই নির্মম সত্য। স্রষ্টার কাছে কি জবাব দিবে এই সকল রাষ্ট্রীয় প্রধান ব্যক্তিগন!! মানবতার রাষ্ট্র কতই না প্রয়োজন।

ধর্ম বর্ণ মত পথ নির্বিশেষে দুনিয়ার সব মজলুম মানুষের জন্য দোয়া কামনা করছি।



করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করছে ভারত। ভয়াবহ এই পরিস্থিতিতে দিল্লির হাসপাতালগুলোতে দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের চরম সংকট। এমন পরিস্থিতিতে ভিক্ষা করে, ধার করে, চুরি করে- যেভাবেই হোক, মোদি সরকারকে দেশের হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লি হাইকোর্ট।

গতকাল বুধবার (২১ এপ্রিল) রাতে এক জরুরি শুনানিতে দিল্লি হাইকোর্ট মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে এ নির্দেশ দেন।


Sabina Ahmed
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের কোভিডের অবস্থা ভারতের মতন না, তার মানে এই না যে বাংলাদেশে কখনই কোভিডের অবস্থা তেমন হবে না। 


ইয়োরোপ আমেরিকা যখন কোভিডে তছনছ হয়ে যাচ্ছিল ভারতে কোভিড তখন মোটামুটি শান্ত ছিল বলে ভারতের সরকার ভেবেছিল তাদের দেশকে কোভিডের সুনামি প্রবেশ করবে না। এই বছর জানুয়ারির ২৮ তারিখে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে মোদী গর্ব করে ভাষণে বলেছিলেন যে ভারতে COVID সুনামি সম্পর্কে আশঙ্কা ভিত্তিহীন ছিল। ভারত কেবল কোভিডকে পরাজিত করেনি, বরং এটি পরিচালনা করার জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামোও তৈরি করেছে। প্রয়োজনের সময়ে দেখা গেছে এই খবর মিথ্যা। 


ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখ যখন ভারতে দৈনিক কোভিড নতুন রোগীর সংখ্যা মোটে ১৫ হাজার তখন ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ ভর্ধন আর অন্যান্য সরকারী আমলারা বাবা রামদেবের করোনিল কিওর নিয়ে মহা হৈচৈ ফেলে দেয় যে তারা ট্রাডিশোনাল উপায়ে কোভিডের সফল চিকিৎসা আবিষ্কার করেছে। ভারতের টিভি চ্যানেলগুলো প্রচার করে রামদেবের করোনিল চিকিৎসা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদন করেছে। পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই কথা শক্তভাবে অস্বীকার করে। 


এর ঠিক দুই দিন পর, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির ২১ তারিখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সক্ষম, সংবেদনশীল, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে ভারত কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজয়ী ঘোষণা করার জন্য একটি প্রস্তাব পাস করে বিজেপি। তারা ক্রেডিট দিয়ে ফুলেফলে ফুলিয়ে তুলে মোদীকে। নিবাচনের মৌসুম চলছে, বিজেপি মহান দেখাতেই হবে। 


মানুষ খুব খুশি হয়ে বগল বাজিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ে, তাদের প্রাণপ্রিয় নেতা পেরেছে দেশকে করোনার থাবা থেকে বাচাতে। মনের ভয় , মাস্কের আবশ্যকতা ঝেড়ে ফেলে ভারতিয়রা। 


মার্চের ৭ তারিখ থেকে ধীরে ধীরে দৈনিক করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। কিন্তু ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ ভর্ধন চোখের সামনে রেকর্ড ব্রেকিং দৈনিক রোগীর সংখ্যা দেখেও বক্তব্য দেন যেই করোনার খেলা ভারতে এসে সমাপ্ত হয়েছে। মেরা ভারত মহান। 


মানুষ আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পলিটিক্যাল র‍্যালিগুলো জমজমাট হয়ে উঠে। মার্চের ১১ তে শুরু হয় কুম্ভ মেলা। ৩২ লাখ মানুষ কুম্ভ স্নানে অংশ গ্রহন করে। ভারতের ৬ রাজ্যে দৈনিক রোগির সংখ্যা এক্সপোনেনশিয়ালি বাড়তে থাকে। এবার সরকার ব্লেইম করা শুরু করে মানুষকে। কেনো তারা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলছে, কিন্তু সরকার নির্দোষ, তাদের সকল ধরনের প্রচার নির্দোষ। চালিয়ে যেতে থাকে মোদী বন্দনা। তখন দৈনিক রোগির সংখ্যা ৬২ হাজার। 


এর মাঝে বিশ্বে ভারতের ইমেজ বাড়াতে মোদী সরকার ভারতে তৈরি ভ্যাক্সিন নিজেদের জনগনকে না দিয়ে রপ্তানি কর শুরু করে। মোদীকে ভারতের মিডিয়া ডাকে বিশ্বগুরু। সরকার জানায় কোভিড সিচুয়েশান আন্ডার কন্ট্রোল, ভয়ের কিছু নাই। এমনকি ভারত এতোটা কনফিডেন্ট সেই সময় যে ফেব্রুয়ারি আর মার্চ মাসে করোনার টাস্কফোর্স তাদের মাসিক আলোচনা আর পর্যালোচনা সভা বাতিল করে দেয়। 


এর পরের ঘটনা আমরা জানি, আমি আমার পূর্বের পোস্ট গুলাতে লিখেছি। ভারতে কেয়ামত নেমে আসে। রোগির সংখ্যা হাসপাতালের বেডের সংখ্যার কয়েকগুন বেশি। কাচামালের অভাবে ভ্যাক্সিনের শর্টেজ, অক্সিজেনের শর্টেজ। কেবল অক্সিজেনের অভাবে এক হাসপাতালে গতকাল ২০ জন রোগী মারা গেছে। কোন কোন হাসপাতালে মাত্র কয়েক ঘন্টার অক্সিজেন সাপ্লাই আছে। খোদ দিল্লির অবস্থা হয়ে পড়েছে ভয়াবহ। কিন্তু তারপরেও মোদীর আর ভারতের ইমেজ বাচাতে দৈনিক মৃত্যুর হার দেখানো হয় আসল সঙ্কাং্খা চাইতে বহুতগুন কম। 


কোভিড ভ্যাক্সিনের কাচামাল আসে আমেরিকা থেকে, অনুরোধ করার পরেও বাইডেন সরকার এখন পর্যন্ত নিজেদের প্রয়োজনের কারনে ভারতের জন্য যেই পরিমান ভ্যাক্সিন দরকার তা দিতে অস্বীকার করে আসছে। আমেরিকার কাছে ৩ কোটির উপর বাড়তি এজট্রা জেনেকার ভ্যাক্সিন মজুদ আছে, তাও পাঠাতে রাজি নয় বাইডেন সরকার। সবাই চাচা আপন প্রান বাচাতে ব্যাস্ত। 
.

ভারতকে দেখে বাংলাদেশের সরকারের এখনই চোখ খোলা দরকার। জেলায় জেলায় তেমন অবস্থা হলে কিভাবে চট জলদি পট কোভিড চিকিৎসা সেন্টার খোলা যাবে তার প্ল্যান প্রোগ্রাম জরুরি ভিত্তিতে করে রাখা দরকার। যেভাবে হউক, যেখান থেকে হউক, চীন কিংবা রাশিয়া থেকে হলেও ভ্যাক্সিন আমদানী করে গনহারে মানুষকে ভ্যাক্সিন দেয়ার কোন বিকল্প নাই। ভারত সেই আমদানি কিভাবে নেবে সেই কথা ভাবার সময় এখন আর নাই। আর অক্সিজেন...অক্সিজেন......অক্সিজেন এর প্রয়োজনীয়তা যে কতটা গুরুতর তা লিখে প্রকাশ করার মতন শব্দ আমার ভান্ডারে নাই। 
.

আর প্রয়োজন ভারতের সাথে সীমান্ত সিল করে দেয়া। সকল ইনকামিং ফ্লাইট নিষিদ্ধ করা। নিশ্চিত করা বাংলাদেশ থেকে কোন মানুষ ভারতে যাবে না, আর ভারত থেকে কেউ বাংলাদেশে আসবে না। 


ভারতে কভিডের খেলা কেবল শুরু, পাড়ি দিতে হবে তাদের আরও কিছু পথ। বাংলাদেশ যে কোন মুহূর্তে সেই পথে প্রবেশ করতে পারে। 

.
#MaskUpBangladesh
.
.
-- ভারতের খবর কালেক্টেড ফ্রম স্যাম জাওয়েদ; অল্টারনেট নিউজের কো-প্রতিষ্ঠাতা।



Comments

Popular posts from this blog

সচিবালয়কে 'হিন্দু-আলয়' -এ রূপান্তর! নেপথ্যে কারা? কি হতে চলেছে বাংলাদেশে?

জাপানে বাংলাদেশী রসায়ন বিজ্ঞানীর অনন্য আবিষ্কারঃ করোনার 'সাময়িক প্রতিরোধ' ও "চিকিৎসা" কেবল ১টি মাত্র ওষুধেই ( One Medicine Treatment)

কাল্পনিক অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ডানপন্থী ব্লগারদের দুঃখের দিনের কান্ডারী ফারাবির নিঃশর্ত মুক্তি চাই